মো: আশরাফ আহমেদ,কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার বরুড়ায় ছাত্রদল নেতাইকবাল হোসেনের উপর বর্বর হামলার পাশাপাশি হত্যা চেষ্টার মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ কর্তৃক হয়রাণি করার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার ১০ জানুয়ারী ২০১৫ তারিখের দুপুর ১ টার দিকে বরুড়া আদ্রা ইউনিয়নের একবাড়িয়া বাজারের মারামারির ঘটনায় ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেনকে বরুড়া থানার মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বরুড়া উপজেলার ফলকামুড়ি গ্রামের হাফেজ আহমদ এর ছেলে।
সরেজিমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের একবাড়িয়া পশ্চিম বাজারস্থ বাংলাদেশ মেডিকেলের পশ্চিম পাশে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী নির্বাচনী অফিস কক্ষ ছিলো। রাজনৈতিক দ্বন্দকে কেন্দ্র গত ১০ জানুযারী ২০১৫ ইং তারিখ রাত অনুমান ০১.০০টায় একবাড়িয়া পশ্চিম বাজারে নাইট গাইড মোঃ ফারুক হোসেনের সামনে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে ১৫/২০ জনের মতো বিএনপির নেতাকর্মীরা কিরিচ, লোহার রড, হকিষ্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ককটেল বিস্ফোরন ঘটায়। সে সময় আওয়ামী লীগের অস্থায়ী নির্বাচনী অফিস কক্ষে হামলা করে ভিতরে থাকা আসবাবপত্র চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে আনুমানিক দুই লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। ওই সময় তারা রাস্তায় উপর ঝুলানো থাকা আওয়ামী লীগের প্রতীক বাঁশের তৈরি কাগজ দ্বারা মোড়ানো একটি ছোট নৌকায় অগ্নিসংযোগ করে।
এছাড়াও হামলাকারীরা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী অফিস কক্ষে থাকা নৌকা প্রতিকের পোষ্টার, ব্যানার ছিড়ে ফেলে। সে সময় কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষী মো: ফারুক বাধা দিলে তাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে সে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এছাড়াও বিএনপি নেতাকর্মীরা অফিস ভাংচুর করার পূর্বে বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরন, কিরিচ ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করাসহ কয়েকজনকে মারধর করে। ওই সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা শোর চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আওয়ামীলীগের অফিস অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর এবং বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের মারামারির ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১০ জনকে আসামী করে বরুড়া থানায় বিস্ফোরক ও হত্যা চেষ্টা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৪/২০১৫।
ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, আমার বাড়ী শিলমুড়ি ইউনিয়নের ফলকামুড়ি এলাকায়। ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম। কিন্তু ওই মামলায় আমাকে ষড়যন্ত্রভাবে জড়ানো হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। আমাকে বেধড়ক মারধর করে হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি প্রতিবেশীদের সহায়তায় কোনমতে প্রাণে বেচে পালিয়ে যাই। পরবর্তীতে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের হামলার ভয়ে আমি গ্রাম থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বর্তমানে আমার জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। এ বিষয়ে বরুড়া থানা অফিসার ইনচার্জ আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বরুড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে, ইকবাল হোসেনের বাড়ীতে ভাংচুরের ঘটনায় তিনি অবগত নন বলে গনমাধ্যমকর্মীদের জানান।