প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রোববার ২২৫টি স্থাপনা উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
তিনি আজ শনিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৫টি মুজিব কিল্লা উদ্ভোধন করবেন এবং ৫০ টি মুজিব কিল্লার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
তিনি বলেন, দুর্যোগে মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ দেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কবল থেকে জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, সকলের কাছে তা মুুজিব কিল্লা নামে পরিচিত। তারই আধুনিক সংস্করণে উপকূলীয় ও বন্যা উপদ্রুত ১৪৮টি উপজেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ চলছে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় এলাকার দুর্গত জনগণ যেমন এ সকল কিল্লায় আশ্রয় নিতে পারবে তেমনি তাদের প্রাণী সম্পদকেও ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে। জনগণের খেলার মাঠ, সামাজিক অনুষ্ঠান ও হাট-বাজার হিসেবেও এগুলোকে ব্যবহার করা যাবে।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, উপকূলীয় এলাকায় বয়স্ক, গর্ভবতী, শিশু ও প্রতিবন্ধী বান্ধব ৩২০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এ সকল আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় দুই লাখ ৫৬ হাজার বিপদাপন্ন মানুষ এবং প্রায় ৪৪ হাজার গবাদি পশুর আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় এলাকার মানুষ তাদের গবাদি পশু সহ আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আশ্রয় নিতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যা প্রবন ও নদী ভাঙ্গন এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বন্যা পীড়িত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুই তলা বিশিষ্ট ২৩০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৯২ হাজার মানুষ এবং ২৩ হাজার গবাদি পশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৮-’২২ মেয়াদে ৪২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
ডা. এনাম বলেন, দুর্যোগে তাৎক্ষনিকভাবে সাড়াদানের অংশ হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত করা হয় এবং দুর্যোগের অব্যবহিত পর দুর্যোগ কবলিত মানুষের মধ্যে প্রাথমিক জরুরি খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি জেলায় ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ভূমিকম্প সহ অন্যান্য দুর্যোগে দ্রুত উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাকোয়াটিক সি সার্চবোট, মেরিন রেসকিউ বোট ও মেগাফোন সাইরেন সহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই কার্যক্রমকে সহজ করার জন্য আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
ডা. এনাম আরো বলেন, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ত পানি পরিশোধনে ৩০টি মাউন্টেড স্যালাইন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সংগ্রহ করা হয়েছে। এ সকল কর্মসূচীর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এন-কে