প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশ বদলে যাওয়ার বাংলাদেশ। আগামী দিনগুলোয় তরুণরাই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করাই সরকারের লক্ষ্য।
সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে তিনি এ নির্দেশ দেন।
এ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৪ এর সেরা মেধাবী পুরস্কার এবং ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’ প্রদান করা হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সত্যি খুব আনন্দিত আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি, এটা তারই একটি দৃষ্টান্ত। এইমাত্র যেটা উদ্বোধন করা হলো সেটা হলো স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি। এটা সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে যার যার অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। নিজেরা সংগ্রহ করতে পারবেন। সেই পদ্ধতিটাই আমরা অনুসরণ করলাম। ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সমস্ত টেলিফোন সিস্টেমকে ডিজিটালাইজ করি। কম্পিউটার শিক্ষার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় দুই তিনটা কম্পিউটার দিয়ে। ছেলেমেয়েরা যাতে শিক্ষা নিতে পারে তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। তাছাড়া আইন পাশ করে ১২টা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল তারা গবেষণায় কোনও বরাদ্দ দেয়নি। গবেষণা আমাদের কোনও বরাদ্দ ছিল না। আমাদের প্রথম বাজেট অল্প ছিল। সেখান থেকেও গবেষণার জন্য টাকা দিয়ে দেই। পরে যখন বাজেট দেই তখন ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দিয়েছিলাম। সেটা ছিল কম্পিউটার শিক্ষা এবং গবেষণায়। আমাদের শুধু একটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমি আরও কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দেই। সেইসঙ্গে ১৬টি বেসরকারের বিশ্ববিদ্যালয়, নভোথিয়েটার প্রতিষ্ঠা, সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট, বায়ু টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, এই সবগুলো আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শুরু করেছিলাম।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আমরা সরকারে এসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেই। ২০০৯ এর পর পর থেকে ২৩ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে স্বাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ। আমরা সেটিকে বর্তমানে ৭৬.৮ ভাগে উন্নীত করেছি। এ সময় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোয় তা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, বিনামূল্যে বই বিতরণের বিষয়টি অনেকে অসম্ভব মনে করলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তা করে দিয়েছে। ২০১০ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ করছি। এখন পর্যন্ত ৪৬৪ কোটির বেশি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার কোনো নীতিমালা থাকুক, এটা চায়নি বিএনপি। এক সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুলি-বোমার শব্দ ও সেশনজট ছিল নিয়মিত বিষয়।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে স্বাক্ষরতার হার ৪৫ ভাগ। আমরা সেটিকে বর্তমানে ৭৬.৮ ভাগে উন্নীত করেছি। এ সময় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোয় তা সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।
উপবৃত্তির টাকা অভিভাবকের মোবাইল ফোনে বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ে পৌঁছে যাবে। মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পাস পর্যায়ে ৬৪ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মেধাবী শিক্ষার্থী পাবেন এ টাকা। মোট ২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এমজে/