মৌলভীবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জন নিহত

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা ভাড়া করে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ এক আত্মীয়কে দেখতে তাঁদের বাড়িতে যান। ফেরার সময় পথিমধ্য কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে তাঁদের বহনকারী অটোরিকশা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পরিবারের তিন সদস্য মারা যান।

গতকাল রবিবার (০২ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় কুলাউড়া উপজেলার আছুরিঘাট এলাকায় মৌলভীবাজার-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন, পার্শ্ববর্তী জুড়ী উপজেলার কুচাই ফাঁড়ি চা-বাগানের বাসিন্দা দীনবন্ধু মুন্ডা (৫৫), দীনবন্ধুর ছেলে পূজন মুন্ডা (৩৫) ও বড় ভাই রবীন্দ্র মুন্ডা (৬০)। এ ঘটনায় আহত হন গাড়ি চালকসহ নিহতদের পরিবারের আরো দুই সদস্য।

কুলাউড়া ফায়ার সার্ভিস, থানা-পুলিশ ও দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, দীনবন্ধু মুন্ডার এক মেয়েকে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর চা-বাগানে বিয়ে দেন।

ওই মেয়ের শাশুড়ী প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত। তাঁকে দেখতে দীনবন্ধু মুন্ডা সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাড়া করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গতকাল রোববার সকালে শ্রীমঙ্গলে রওনা দেন।

বিকেলের দিকে তাঁরা সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সন্ধ্যা সাতটার দিকে আছুরিঘাট এলাকায় পৌঁছালে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়।

এ সময় বিপরীতমুখী ফ্রেশ কোম্পানির একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে তাঁদের অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে যায়। পূজন মুন্ডা ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে গাড়ির ভেতরে আটকা পড়া হতাহত ব্যক্তিদের টেনে বের করেন।

এর পর ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে করে তাঁদের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

পরে অবস্থার অবনতি ঘটায় দীনবন্ধু, দীনবন্ধুর স্ত্রী কবিতা মুন্ডা, বড় ভাই গোপাল মুন্ডা, রবীন্দ্র মুন্ডা ও অটোরিকশার চালক আমির উদ্দিনকে মৌলভীবাজার সদর এবং সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, হাসপাতালে আসার আগেই পূজন মুন্ডা মারা যান। মৌলভীবাজারের হাসপাতালে নেওয়ার পথে রবীন্দ্র মুন্ডা ও সিলেটে নেওযার পথে দীনবন্ধু মুন্ডা মারা যান।

নিহত ব্যক্তিদের প্রতিবেশী পঞ্চ নায়েক জানান, তিন জনের লাশ বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, আইনিপ্রক্রিয়া ও ময়নাতদন্তের পর লাশগুলো হস্তান্তর করা হবে।

এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ক্যশৈনু মারমা সোমবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে নিহতদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা কবে। এ ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

দুর্ঘটনার পর ঘাতক কাভার্ড ভ্যানের চালক পালিয়ে গেছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ২টি জব্দ করা হয়েছে।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img