ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির পরও গত বছরের তুলনায় এ বছর সাধারণ হজ প্যাকেজের খরচ কমানো হয়েছে। যার পরিমাণ সরকারিভাবে ১ লাখ ৪ হাজার ১৭৮ টাকা এবং বেসরকারিভাবে কমেছে ৮২ হাজার ৮১৮ টাকা। এ দেশের হজযাত্রীরা যাতে একেবারেই যৌক্তিক খরচে হজব্রত পালন করতে পারে সে বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি।
তিনি বলেন, হজযাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে দাপ্তরিক যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো আরও কীভাবে সহজ করা যায়, হজযাত্রীদের আরেকটু বেশি কমফোর্ট দেওয়া যায়, সে বিষয়েও আমরা কাজ করছি। হজযাত্রীদের সর্বোত্তম সেবা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঢাকাসহ সারাদেশে চার দিনব্যাপী হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার।
জানা গেছে, চার দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ঢাকাসহ সারাদেশে ৩০ হাজার হজযাত্রী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবেন। এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ২৮৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন হজে যাচ্ছেন। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বিভিন্ন সেমিনারের মাধ্যমে হজযাত্রীদের কীভাবে তারা হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নেবেন, সঙ্গে কি কী নেবেন, সেখানে কীভাবে হজ পালন করবেন, কীভাবে ফিরে আসবেন, বিপদে পড়লে কী করবেন ইত্যাদি বিষয়ে শেখানো হবে।
ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সবাই যাতে সহি-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আপনাদের প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করা হয়েছে। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন, ইনশাল্লাহ।
তিনি বলেন, প্রশিক্ষণটা যত ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারবেন, আপনাদের দক্ষতা ততবেশি শানিত হবে, আত্মবিশ্বাস ততটাই বৃদ্ধি পাবে। জীবনের প্রতিটিক্ষেত্রেই সফলতা ও উৎকর্ষতার প্রধান হাতিয়ার হলো প্রশিক্ষণ। কোনো কিছু না বুঝলে প্রশিক্ষক যারা থাকবেন তাদের জিজ্ঞাসা করবেন। যতবেশি প্রশ্ন করতে পারবেন ততবেশি শিখতে ও জানতে পারবেন। নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন। সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূতি প্রকাশ পাবে। সে দেশের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে যাতে কোনোরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যতœবান হতে হবে। আপনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন। কেউ চায় না হজযাত্রী কষ্ট পাক, হজযাত্রা অসুন্দর হোক। সরকারও করে না, সরকারের যারা প্রতিনিধি তারাও করে না, যারা সহযোগী তারাও করে না। যারা এজেন্সির মালিক তারাও করে না।
মন্ত্রী বলেন, গত বছর একজন এজেন্সি মালিক হাজীদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। তারপরও একজন হজযাত্রী থেকে যায়নি। সবাই যেতে পেরেছে। ওই এজেন্সি মালিককে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এজন্য এজেন্সি মালিকরা সচেতন হয়েছে। তারপরও তাদের যদি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি হয়, তাহলে আপনারা (হজযাত্রী) অভিযোগ দেবেন। আমরা সেটির শুনানি করে যার যতটুকু শাস্তি পাওয়া দরকার ততটুকু দেব।
এমজে/