নারী উন্নয়নে নবজাগরণ ঘটেছে বাংলাদেশে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিটি সেক্টরে নারীদের সফল অংশগ্রহণে বাংলাদেশের নারী অগ্রযাত্রায় নবজাগরণ ঘটেছে।

তিনি বলেন, ‘নারীদের অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই কারণ নারীরা গ্রামীণ পর্যায়েও প্রতিটি সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে এক সভায় দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদে ৪৮টি সংরক্ষিত আসনে ১৫৫৩ জন নারী আবেদন করেছেন। এটি প্রমাণ করেছে যে বাংলাদেশে নারী উন্নয়নে একটি নবজাগরণ ঘটেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকশর মধ্যে ৪৮ জন নারীকে খুঁজে বের করা তাঁদের জন্য কঠিন কাজ। তবে মনোনয়ন না পেলে হতাশ না হয়ে দেশ ও জনগণের জন্য মাতৃস্নেহে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমি নিজেও মাতৃস্নেহে দেশ গড়তে চাই। আজকে নারীদের মাঝে যে চেতনা এসেছে এবং নারী নেতৃত্ব যেন তৃণমূল থেকে শুরু হয় স্থানীয় সরকারে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। প্রাইমারি স্কুলে ৬০ ভাগ নারীর চাকরির ব্যবস্থা করেছি। খেলাধুলাও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী একজন নারী বিবি খাদিজা (রাঃ) এবং মেয়েরা মায়ের জাতি সেটাও মনে রাখতে হবে। কাজেই মেয়েদের অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই, এ ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সচেতন। আজকে আমাদের গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নারীরা পিছিয়ে নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে নারীদের ট্রেনিং সহ তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের সব রকমের ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। কেননা আমরা আমাদের দেশটাকে আরো উন্নত করতে চাই, সে ক্ষেত্রে নারী পুরুষ একত্রে কাজ করতে পারলেই কেবল সেটা সম্ভব হবে।

তিনি মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা দরখাস্ত করেছেন তাদের অনেকেই জানেন হয়তো তারা পাবেন না। কিন্তু নিজের অস্তিত্বটাকে জানান দেওয়া, যে আমি আছি। আমরাও যোগ্য, আমরাও পারি। হ্যাঁ আমি এটা নিজেও বিশ্বাস করি সকলেই যোগ্য, কেউ অযোগ্য নয়। আমি এখনো বলবো যদি কেউ এখনো পেছনে পড়ে থাকেন তাদের টেনে আনার দায়িত্ব কিন্তু এই রাজনৈতিক নেতৃত্বের। আর সেখানে আমাদের এই বোনেরাই পারবে, কাউকে আমরা পেছনে ফেলে রেখে চলবো না। সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যাব।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালে দেশের ফেরার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ফিরে আমি পেয়েছিলাম সারি সারি কবর। সেই কবরের মাটি ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না। এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে দিবো না। আমার যাত্রাপথ এত সহজ ছিল না। নানা রকম ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত চলছিল, এখনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিশাল জনসভায় আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। এই বাংলাদেশের জনগণই আমার আপন জন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যেভাবে আমার বাবা তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। যেভাবে আমার মা, আমার ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন আমিও আমার বুকের রক্ত ঢেলে দেব এই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য।

তাঁর চলার পথে পথে প্রতি পদে বাধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার একমাত্র শক্তি হলো মানুষের সমর্থন ও মানুষের অনুপ্রেরণা। সেজন্য মানুষের জন্যই তার কাজ করা। ওরা ভেবেছিল রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছিল এজন্য যে বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। জানিনা আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বারবার মৃত্যুকে মুখোমুখি দেখেছি কখনো গুলি, কখনো বোমা, কখনো গ্রেনেড হামলা এসব কিছুই আমাকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমার দলের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করে বারবার আমাকে রক্ষা করেছে। অনেকে জীবন দিয়ে গেছেন। তাদের সব সময় আমি স্মরণ করি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img