আনসারকে স্মার্ট বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতেই স্মার্ট বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ আনসারকে গড়ে তোলা হচ্ছে। জাতীয় যেকোন প্রয়োজনে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে আনসার বাহিনী।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আনসার বাহিনীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস ও রেলে আগুন দেওয়াও কঠোরভাবে প্রতিহত করেছে আনসার। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আনসার বাহিনীকে আরও সজাগ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে শহরের পাশাপাশি গ্রামের উন্নয়নেও আনসার বাহিনীকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। আর এতে সহযোগিতা করছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।

যেকোনো অবস্থা মোকাবিলার সক্ষমতা সরকারের আছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সংগ্রাম, জঙ্গিবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ। কাজেই এই মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা, আর্থ সামাজিক উন্নতি করা এবং তাদের নিরাপত্তা বিধান করা, এটাই আমাদের কাজ। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এর হাত থেকে আমরা দেশকে রক্ষা করতে চাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান সব সময় অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমরা আর পেছনে ফিরে তাকাব না। উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব। নিরাপদ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সহনীয় সমৃদ্ধশালী ব-দ্বীপ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে শতবর্ষ মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ যেন সুরক্ষিত থাকে, উন্নত জীবন পায় এবং প্রত্যেকে যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণ সমাজ, তারাই হবে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জাতীয় যেকোনো প্রয়োজনে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি- জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি প্রতিহত করে জাতীয় সম্পদ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তারা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরাতন আইন পরিবর্তন করে আমরা ‘আনসার ব্যাটালিয়ন আইন-২০২৩’ পাস করেছি। এতে করে তারা অন্য বাহিনীর সদস্যদের মতো প্রথম দিন থেকেই স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া উপজেলা আনসার কোম্পানি কমান্ডার, ইউনিয়ন প্লাটুন কমান্ডার ও ইউনিয়ন দলনেতা/দলনেত্রীদের আইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে ও মাসিক সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সাধারণ আনসার সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধি এবং রেশনসামগ্রীর উপকরণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। নারী ভিডিপি সদস্যদের জন্য আধুনিক ডিজাইনের নতুন শাড়ি প্রবর্তন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিকাশে এ বাহিনীর অবদান উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশ গেমস এ পরপর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সাফল্য অর্জনের পর হতে অদ্যাবধি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রাখছেন। আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের নতুন ও খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ তৈরির সুতিকাগার। তারা যাতে দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও সুনাম বয়ে আনতে পারে সেজন্য বাহিনীতে একটি ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপ-মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে অসীম সাহসিকতা ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বাহিনীটির ১৮০ জন সদস্যকে প্রেসিডেন্ট গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, বাংলাদেশ গ্রাম প্রতিরক্ষা দল পদক, প্রেসিডেন্ট আনসার পদক ও বাংলাদেশ আনসার পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে গাজীপুরের আনসার ভিডিপি একাডেমিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img