বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ (মুজিব : দ্য মেকিং অব আ নেশন) চলচ্চিত্র থেকে ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য ও নতুন অধ্যায় সম্পর্কে জাতি জানতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার শোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি একটি জীবনভিত্তিক ছবি, এ ছবির মাধ্যমে ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য আমরা জানতে পারবো। চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত কলাকৌশলী, যারা স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন, গল্প লিখেছেন এবং নির্মাণ কাজে যারা ছিলেন সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আগামীকাল পুরো বাংলাদেশে মুজিব : একটি জাতির রূপকার ছবিটি মুক্তি পাবে। দেশবাসীর কাছে আমার আহ্বান থাকবে, ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য আপনারা জানতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমার মা, আমার দাদা দাদির সম্পর্কে আপনারা জানতে পারবেন। আমি আশা করি সবাই ছবিটি দেখবেন। ইতিহাসের নতুন অধ্যায় আপনারা দেখতে পারবেন।
তিনি বলেন, এই চলচ্চিত্রটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক। একেবারে ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা এবং স্বাধীনতা অর্জনের ওপর ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নির্ভর সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু একটি জাতির রূপকার, একটি দেশের রূপকার।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। জাতির পিতার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। ইতিহাস কথা বলে, ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সেটাই আজকে প্রমাণিত।
বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। ২০১৯ সালে সিনেমাটির কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষে চলতি বছরের ৩১ জুলাই সিনেমাটি বাংলাদেশে আনকাট সেন্সর ছাড়পত্র পায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া চলচ্চিত্রটির পরিচালক এবং অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, অভিনেত্রী দিলারা জামান, অভিনেতা আরিফিন শুভ, নুসরাত ফারিয়া প্রমুখ।
এর আগে রোববার (১ অক্টোবর) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বায়োপিকের ট্রেলার প্রদর্শনকালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আগামী ১৩ অক্টোবর সারাদেশে মুক্তির ঘোষণা দেন।
মন্ত্রী বলেন, সিনেমাটি বাস্তব ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। ১৫ আগস্টের ঘটনাটি দিয়ে সিনেমাটি শেষ হয়েছে। খুনিরা কীভাবে ১০ বছরের রাসেলকে কীভাবে হত্যা করল সেটি দেখা খুবই কষ্টকর। এটি জাতির জন্য ইতিহাসের একটি দলিল। বঙ্গবন্ধু কীভাবে জাতির রূপকার হলেন সেটি এই সিনেমায় চিত্রায়িত হয়েছে।
এই সিনেমাতে প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী অসাধারণ অভিনয় করেছেন বলেও জানান তিনি।
আগামীকাল শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সারাদেশে ১৫৩ প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নির্ভর সিনেমা ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’। আগামী ২৭ অক্টোবর ভারতে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
ভারতের খ্যাতিমান পরিচালক শ্যাম বেনেগালের সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। শেখ হাসিনা চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ফারিয়া এবং বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে- খায়রুল আলম সবুজ (লুৎফর রহমান), দিলারা জামান (সাহেরা খাতুন), সায়েম সামাদ (সৈয়দ নজরুল ইসলাম), শহীদুল আলম সাচ্চু (এ কে ফজলুল হক), প্রার্থনা দীঘি (ছোট রেনু), রাইসুল ইসলাম আসাদ (আবদুল হামিদ খান ভাসানী), গাজী রাকায়েত (আবদুল হামিদ), তৌকীর আহমেদ (সোহরাওয়ার্দী), সিয়াম আহমেদ (শওকত মিয়া), মিশা সওদাগর (জেনারেল আইয়ুব খান), এলিনা (বেগম খালেদা জিয়া) ও জায়েদ খান (টিক্কা খান)।
২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে মুম্বাইয়ের দাদা সাহেব ফালকে স্টুডিওতে সিনেমার প্রথম ধাপের শুটিং শুরু হয়।
সিনেমাটিতে সহযোগী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন দয়াল নিহালানি। চিত্রনাট্য লিখেছেন অতুল তিওয়ারি ও শামা জায়েদি। শিল্প নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন নীতিশ রায়। কস্টিউম ডিরেক্টর হিসেবে আছেন শ্যাম বেনেগালের মেয়ে পিয়া বেনেগাল।
সিনেমাটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে তার অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দানসহ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এমজে/