‌‘ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, বাংলাদেশ কারও ওপর নির্ভরশীল নয়’

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী কোনো দেশের কাছ থেকে কিছু কেনা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৫ মে) বিকেল সদ্য সমাপ্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের ফলাফল সম্পর্কে জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন তিনি। বিকেল ৪টার কিছু সময় পর গণভবনে ওই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেসব দেশ থেকে কিছু কিনব না, এত ভয়ের কী আছে। নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। কারও ওপর নির্ভরশীল নয় বাংলাদেশ। এরই মধ্যে দুটি পদক্ষেপ নিয়েছি বলেও জানান সরকারপ্রধান।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত রয়েছেন।

রিজার্ভ প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ৩১.২২ বিলিয়ন রিজার্ভ রয়েছে। ২০০৬ সালে ছিল এক বিলিয়নেরও কম। সুতরাং রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

সরকারপ্রধান জানান, কোনো দেশে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। সে হিসেবে আমাদের আরও বেশি রয়েছে। এজন্য রিজার্ভ কমে যাওয়াকে দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে দেখছে না সরকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০০৬ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল শূন্য দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার, এখন ৩১ বিলিয়ন ডলার আছে। দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমাদের সব জমি আবাদ করব, আমরা অন্যের উপর নির্ভর করব না। আমরা নিজেদেরটা দিয়ে নিজেরা চলব।’ জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সোমবার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে, আমরা তাদের কাছ থেকে কিছু কেনাকাটা করব না। ভয়ের কিছু নেই, অনাবাদী জমি সব চাষ করে, যা আসে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাব। উন্নয়নশীল না উন্নত দেশেও খাদ্যের সমস্যা। একটার বেশি টমেটো কেনা যাবে না, ছয়টার বেশি ডিম কেনা যাবে না। রোজায় তো কোনো হাহাকার শোনা যায়নি। কেউ কি আসছে, আপনাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে? আসেনি। সবাই ইফতারের জন্য এগিয়ে এসেছে। আমাদের দল ও নেতাকর্মীদের এজন্য ধন্যবাদ জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথা নাই বার্তা নাই, আমাদের নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাবে, আমরা ভয় নিয়ে বসে থাকব। কেন? আমাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, আমাদের দেশের মানুষই নিজের দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করে।’

ত্রিদেশীয় সফরে গত ২৫ এপ্রিল জাপানের রাজধানী টোকিও পৌঁছান শেখ হাসিনা। সেখানে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে আটটি চুক্তি হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে আরও কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এমজে/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img