সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের শূন্য থাকা পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সারা দেশের চাকরিপ্রার্থীরা। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশের দাবিও জানান তারা।
বুধবার সকালে ডিপিই মিরপুর ২-এর সামনে পদ সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিতে গণআন্দোলনে অংশ নেন কয়েকশ চাকরিপ্রার্থী। একই দাবিতে ঢাকার বাইরে রাজশাহী, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে মিছিল ও মানববন্ধন করেন।
চলমান নিয়োগ কার্যক্রমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শূন্যপদ পূরণ, পদ ৫৮ হাজার পর্যন্ত বৃদ্ধি ও ভাইভায় অংশ নেওয়া প্রতি তিনজনের একজনকে নিয়োগ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক পদে ৪৫ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগের কথা ইতিপূর্বে বলা হলেও পদ সংখ্যা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ৩২ হাজার ৫৭৭টিই রাখা হচ্ছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর পরই এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হতে শুরু করেন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষক নিয়োগের ভাইভায় অংশ নেওয়া প্রার্থীরা। সারা দেশের সব শূন্যপদ পূরণ করলে নিয়োগের সুযোগ পাবেন প্রায় ৫৮ হাজার প্রার্থী। তাই প্রার্থীরা এসব শূন্যপদ পূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
দুই বছর আগে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তখন ৩২ হাজার ৫৭৭টি পদে নিয়োগের ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পর পদ বাড়িয়ে ৪৫ হাজার নিয়োগের কথা বলা হয়।
এমনকি প্রাথমিক সহকার শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আগেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন অবসরজনিত কারণে আরও ১০ হাজারেরও বেশি পদ শূন্য হওয়ার কথা উল্লেখ করে পদসংখ্যা ৩২ হাজার ৫৭৭ থেকে বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার করার কথা জানান।
এর পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা এটি ৫৮ হাজার পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা জানান। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি তিনজনে একজন প্রার্থী নেওয়া হবে বলে প্রায় এক লাখ ৫১ হাজার প্রার্থীর ভাইভা নেওয়া হয়।
এ অবস্থায় ৫৮ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারেও প্রস্তাব করা হয় গত অক্টোবরে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খানের বদলির পর কর্তৃপক্ষ ৩২ হাজার ৫৭৭ পদেই জনবল নিয়োগ দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু তার বদলির আগে পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কথা শোনা যায়নি।
আর এখন পদ সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জানান, অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩২ হাজার ৫৭৭ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। পদ বাড়ানোর ফলে কেউ যদি বিষয়টি নিয়ে আদালতে যান, তাহলে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যেতে পারে। এ কারণেই পদ বাড়ানো হচ্ছে না।
প্রায় ১৩ লাখ ৯ হাজার চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেন। এ বছর কয়েক ধাপে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।