বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে নিয়ে ভোটার ও নির্বাচনি কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েছেন। প্রবাসী বড় ভাইয়ের নামে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াসহ নানা তথ্য গোপন করেও মনোনয়নপত্রটি বৈধ হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মতামত চেয়েছেন।
বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ৮নং ওয়ার্ডে জানাইয়া গ্রামের আমির উদ্দিন কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। ৬ অক্টোবর মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আমিরের মনোনয়নপত্র তার বড় ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামাল উদ্দিনের নামে হয়ে গেছে। যাচাই-বাছাই শেষে তা বৈধও করা হয়েছে। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ক্ষুব্ধ হন।
কাউন্সিলর প্রার্থী ও ইউপি সদস্য ইউনুস আলী জানান, জানাইয়া গ্রামের রইছ আলীর চার ছেলে। তারা হলেন-জামাল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, আমির উদ্দিন ও নাজিম উদ্দিন। এর মধ্যে জামাল ও কামাল যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। এরপরও কিভাবে কামালের নামে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হলো? ভোটাররা কামাল না আমির কাকে ভোট দেবেন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের স্থানীয় কর্মকর্তাদের প্রতি অভিযোগও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, শুধু নাম পরিবর্তন নয়, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মামলার বিষয়েও তথ্য গোপন করা হয়েছে। কামাল ও আমির দুজনই বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা। কামাল উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি আমির বিশ্বনাথ উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মনোনীত হন। দুজনই এসএসসি পাশ ও তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু হলফনামায় এসব তথ্য নেই। এরপরও রিটার্নিং কর্মকর্তা কিভাবে তার মনোনয়নপত্র বৈধ করল তা ইসির তদন্ত করে দেখা উচিত।
জেলা পুলিশের মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৬ জুন দোকানপাটে হামলা চালানোর অভিযোগে কামালের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দক্ষিণ সুরমা ও বিশ্বনাথ থানায় আমিরের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে।
হলফনামায় প্রার্থীর নাম কামাল উদ্দিন। জন্মতারিখ ১৯৪২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হিসাবে তার বয়স ৮০ বছরের বেশি। শিক্ষাগত যোগ্যতা-স্বশিক্ষিত। আর মামলার তথ্য গোপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রিটার্নিং অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, কামাল উদ্দিন নামে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। দাখিলের পর তার আঙুলের ছাপ ও ছবি ঠিক থাকায় এবং কেউ অভিযোগ না করায় মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালে নাম ও বয়স সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন আমির। আমির ও কামাল একই ব্যক্তি কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা নাকি একই ব্যক্তি। বিজয়ী হলে কাউন্সিলর কে হবেন আমির না কামাল এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ জটিলতা নিরসনে ইসির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ইউআর/