৪ অক্টোবর বিদ্যুত বিপর্যয়ের ঘটনায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দুই প্রকৌশলীকে দায়িত্বে ‘অবহেলার’ অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বরখাস্ত দুজনের মধ্যে একজন পিজিসিবির উপসহকারী প্রকৌশলী এবং অন্যজন সহকারী প্রকৌশলী পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তবে তাদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ব্ল্যাকআউটের ঘটনায় মোট তিনটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। এর মধ্যে পিজিসিবির তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসেছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী এ দুই কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের রোববার থেকেই বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় আর কারও দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য তদন্তে বাকি যারা জড়িত আছেন, তাদের নামও বেরিয়ে আসবে। তখন তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বিদ্যুতের জাতীয় সঞ্চালন লাইনে বিপর্যয়ের কারণে ৪ অক্টোবর একযোগে দেশের একটি বড় অংশে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরে আসে। তবে এর পর থেকে লোডশেডি বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে পিজিসিবি একটি তদন্ত কমিটি করে। শুক্রবার রাতে জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, ‘গ্রিড বিপর্যয়ের পেছনে কারিগরি নয়, মূলত ব্যবস্থাপনা ত্রুটি ছিল। আর এ জন্য দায়ী সঞ্চালন কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের যে ব্ল্যাকআউট হয়েছিল, সেটি পিজিসিবি তার ম্যানেজমেন্ট করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল। যার কারণে ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটে। সেদিন বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা (ডিমান্ড) বেশি ছিল। ডেসকো থেকে তাদের বলা হয়েছিল যে, তোমরা কাট ডাউন করো, নইলে বাধাগ্রস্ত হবে। কিন্তু তারা শুনেনি। বলা হয়েছিল, এটি না করলে ফ্রিকোয়েন্সি আরও ওপরে উঠে গিয়ে ক্র্যাশ করবে। বাস্তবেও তা-ই হয়েছে। ওরা কথাটা শোনেনি, কন্টিনিউ করেছে। একপর্যায়ে ব্ল্যাকআউট হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালে গ্রিড বিপর্যয়ে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল দেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩২ জেলা। গত মাসে গ্রিড বিপর্যয়ে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল অঞ্চল ৪০ মিনিট থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
এর আগে ২০০২, ২০০৭, ২০০৯ সালেও গ্রিড বিপর্যয়ের বড় ঘটনা ঘটে।