দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। এই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৩ জনের।
এ ছাড়া গত একদিনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪৪ জন। এর আগে গত ১ অক্টোবর দেশে এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৩৫ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে সারা দেশে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ১৫৬ জনে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪৪ জন। এদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ২৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৫ জন। বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, এক দিনে নতুন ৩৪৪ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৫৬ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সর্বমোট ১৮ হাজার ৬৪৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৬ হাজার ৪২৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। সেপ্টেম্বরে ৯ হাজার ৯১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ গত মাসে দৈনিক গড়ে ৩৩০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। গত মাসে ডেঙ্গুতে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ দিনে একজনের বেশি রোগী মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্ষাকাল এলেই ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশার উৎপাত বাড়ে। এ সময় এই মশার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে। এর আগে ২০১৯ সালে এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত এটাই এক বছরে সর্বোচ্চ ভর্তি রোগী। সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের।
২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় ২৬ জনের। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারা দেশে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জন মারা যান।
ইউআর/