বিদ্যুৎ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীরা। জেনারেটর দিয়ে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু থাকলেও ওয়ার্ডের ভেতরে গরমে অনেক রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সীমিত আকারে কয়েকটি বাতি ও ফ্যান চললেও বন্ধ রয়েছে এসি। তবে হাসপাতালের সব স্থানে জেনারেটর সংযোগ না থাকায় নেবুলাইজ করতে পারছেন না অনেক রোগী। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্বাসকষ্টসহ নানা অসুখে চিকিৎসাধীন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, চমেক হাসপাতালের অধিকাংশ ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগীর চাপ থাকে। এমনকি বারান্দায়ও শত শত রোগী চিকিৎসা নেন। বিদ্যুৎ না থাকায় বারান্দায় থাকা রোগীরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন।
বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি বাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি। অপারেশন থিয়েটার, সিসিইউ, আইসিইউ’র সব কাজ চলমান আছে। ওয়ার্ডেও বাতি জ্বলছে। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় কিছুটা সমস্যাতো হবেই।’
বিপর্যয়ের বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানানো হয়- সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাট দেখা দেওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলার অধিকাংশ এলাকা একযোগে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিবি) জানায়, দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিড ট্রিপ করে (বিপর্যয় ঘটে)।
তবে সন্ধ্যার পর রাজধানীসহ কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করেছে। রাতের মধ্যে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মীর আসলাম উদ্দিন বলেন, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর (আংশিক), ঢাকা (আংশিক), চট্টগ্রাম (প্রায় রিকভার), সিলেট (আংশিক) নারায়ণগঞ্জ (আংশিক) এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে।
তিনি জানান, ঢাকায় লোড বেশি লাগবে। তাই ঢাকায় ধীরে বিদ্যুৎ আসবে। সিস্টেমের স্ট্যাবিলিটি মোটামুটি সন্তোষজনক না হলে ঢাকায় হেভি লোডে রিস্টোর ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর দেশের সড়ক, মহাসড়ক ও বাসাবাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। সড়কে সিসি ক্যামেরা ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোতে জেনারেটরের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীসহ পুলিশের প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের একাধিক কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউআর/