প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া রোগনিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধের কোনো বিকল্প নেই। বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা করে রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। এ বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
আজ শনিবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথাগুলো বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, প্রতিবারের ন্যায় এবারো বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বিশ্বব্যাপী থ্যালাসেমিয়া রোগীদের মধ্যে স্বাস্থ্য বৈষম্য মোকাবেলা’-যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।
থ্যালাসেমিয়া একটি মারাত্মক রক্তশূন্যতাজনিত রোগ। এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর প্রায় ৯০ শতাংশ জন্ম নেয় নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। দারিদ্র্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে বেশির ভাগ শিশুই পর্যাপ্ত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া রোগী ও পরিবার উভয়ই সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ এইচপিএনএসপির আওতায় আটটি সরকারি মেডিকেল কলেজে থ্যালাসেমিয়া ম্যানেজমেন্ট সেন্টার গঠন করেছে। এই সেন্টারগুলোতে ‘ন্যাশনাল গাইডলাইনস অন থ্যালাসেমিয়া মানেজমেন্ট ফর ফিজিশিয়ানস’ অনুযায়ী রোগীদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ সরবরাহ করা হবে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের রেজিস্ট্রেশন করে তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ‘ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হূদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি’ থেকে আমরা থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করছি।
তিনি আরো বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের প্রতি মাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হয়। বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে রক্তের ৩০ শতাংশ চাহিদা মেটে, যার ফলে রোগীদের জন্য রক্তের অভাব বিরাজমান। আমি দেশের যুবসমাজকে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য নিয়মিত স্বেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
পরিশেষে ‘বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস ২০২১’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।