ম্যাগনেটিক কয়েনের নামে ব্যবসায়ীর ৭৫ লাখ টাকা খোয়া

আন্তর্জাতিক বাজারে তথাকথিত ম্যাগনেটিক কয়েনের অনেক মূল্য রয়েছে- এমন বুঝিয়ে বহু মানুষকে বোকা বানিয়েছে একটি চক্র। হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। সর্বশেষ এক ব্যবসায়ীকে নানা কৌশলে বশ করে তারা। হাতিয়ে নেয় ৭৫ লাখ টাকা। শনিবার এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. ইউসুফ আলী, মো. খবির চৌকিদার, মো. শামীম, মো. নাসির উদ্দিন আকন ও মো. জসিম গাজী। এ সময় তাদের কাছ থেকে কথিত ১০টি ম্যাগনেটিক কয়েন জব্দ করা হয়। গ্রেফতারদের খিলক্ষেত থানায় দায়েরকৃত মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ডিবি ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম রেজাউল হক বলেন, চক্রটি সুকৌশলে মানুষ ঠকিয়ে প্রতারণা করে আসছিল। সর্বশেষ ভুক্তভোগী একজন ব্যবসায়ী। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ভুক্তভোগীর পরিচিত এক ব্যক্তি কয়েকজন ম্যাগনেট ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেয়।

‘আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা ভুক্তভোগীকে কয়েনের আন্তর্জাতিক চাহিদা ও বহুমূল্যের কথা জানায়।তাদের কাছে একটি কয়েন আছে বলেও উল্লে­খ করে। যা কিনে বিক্রি করলে অনেক টাকার মালিক হতে পারবে বলেও জানায়। এরপর নিকুঞ্জ এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় ম্যাগনেট সম্পর্কে তার কথা বিশ্বাস করেন ভুক্তভোগী।’

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এরইমধ্যে কয়েন কেনার জন্য মিন্টু নামের একজনের সঙ্গেও কথা হয় তার। যিনি কয়েন কিনতে টাকা বিনিয়োগ করছেন বলে জানান। এরপর দীর্ঘদিন তাদের মধ্যে কথাবার্তা ও যাতায়াত চলতে থাকে। কয়েন ক্রয়ের জন্য একটি ঠিকানা দেন মিন্টু।

‘পরে ২৮ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টায় তার দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে কয়েন কিনতে ৭৫ লাখ টাকা দেন তিনি। টাকা গ্রহণ করেন মো. ইউসুফ আলী, মো. খবির চৌকিদার, মো. শামীম, মো. নাছির, মো. জসিম ওরফে জুয়েল। এরপর ৩-৪ দিন পর ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ ফোন করে ভুক্তভোগীকে জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তাদেরকে বরিশাল যেতে হবে।’

পরবর্তী ঘটনার বর্ণনায় রেজাউল হক বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রাইভেটকারে করে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফসহ ভুক্তভোগীরা বরিশাল যান। সেখানে তারা একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করেন। ইঞ্জিনিয়ার তখন ফোনের মাধ্যমে কয়েন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা কথিত ম্যাগনেট কয়েন নিয়ে আসব, আসতেছি বলে কালক্ষেপণ করতে থাকে।

‘এরপর গত ৪ সেপ্টেম্বর সকালে ভুক্তভোগীকে হোটেলে রেখে ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ কয়েন মালিকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে ভুক্তভোগী বারবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এরপর খিলক্ষেত থানায় একটি মামলা করেন।’

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মামলাটির তদন্তকালে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর শনিবার ধানমণ্ডি থানার লেকপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারেও অভিযান অব্যহত রয়েছে।

ইউআর/

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img