মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। বেইজিং জানিয়েছে, পেলোসি যদি সফরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেন তাহলে ‘মারাত্মক পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
পেলোসি যদি তাইওয়ানে সফরে যান তাহলে সেটি ১৯৯৭ সালের পর সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্বাচিত কোনও কর্মকর্তার সফর হবে। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন।
স্বশাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রদেশ বলে বিবেচনা করে চীন। বেইজিং বারবার বলে আসছে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও দ্বীপটিকে নিজেদের আওতায় রাখবে তারা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট সদস্য ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসনও চেষ্টা করছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনী মনে করে এটা ভালো পরিকল্পনা নয়। তবে হোয়াইট হাউস এ ধরনের যেকোনও সফরের বিরুদ্ধে চীনা বক্তব্যকে ‘স্পষ্টভাবে অসহায় এবং প্রয়োজনীয় নয়’ বলে অভিহিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, স্পিকার পেলোসি কোনও সফরের ঘোষণা দেননি এবং তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব অপরিবর্তনীয় রয়েছে। চীনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখা যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সঙ্গে বেসরকারি সম্পর্ক বজায় রাখে। এই সম্পর্ক আরও জোরালো করতে চায় ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ ও কংগ্রেসে তাইওয়ানের প্রতি ব্যাপক দ্বিদলীয় সমর্থন রয়েছে। এছাড়া কংগ্রেসে প্রায় ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে চীনের কড়া সমালোচকদের একজন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। চীনের মানবাধিকার রেকর্ড, গণতন্ত্রপন্থী ভিন্নমতালম্বীদের সঙ্গে আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া ১৯৮৯ সালের হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হওয়াদের স্মরণ করতে তিয়ানয়ানমেন স্কয়ার পরিদর্শনও করেছেন তিনি।
পেলোসি তাইওয়ান সফরের মূল পরিকল্পনা ছিল এপ্রিলে। তবে ওই সময় তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সেই সফর স্থগিত হয়ে যায়। সফরের বিস্তারিত নিয়ে আলাপে অস্বীকৃতি জানালেও গত সপ্তাহে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাইওয়ানের প্রতি সমর্থন দেখানো আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ’।
সোমবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন পেলোসি যদি সফরের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান তাহেলে তার দেশ ‘কঠোর এবং যথাযথ পদক্ষেপ’ নেবে। তিনি বলেন, ‘আর মারাত্মক সব পরিণতির জন্য দায়ী হবে যুক্তরাষ্ট্র’।
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সতর্ক করে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সামরিক প্রতিক্রিয়াও দেখানো হতে পারে। কর্নেল ট্যান কেফেই বলেন, ‘মার্কিন পক্ষ যদি সামনে আগানোয় জোর দেয় তাহলে চীনের সেনাবাহিনী অলস বসে থাকবে না এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতার জন্য কোনও বহিরাগত হস্তক্ষেপ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেবে’।
ইউআর/