মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) সাবেক এক এমপিসহ চারজনকে ফাঁসি দেওয়ার ঘটনায় দেশটির সামরিক জান্তা সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
সোমবার মিয়ানমারের জান্তা সরকার মৃত্যুদণ্ডের এ রায় কার্যকর করে। অনেক বছর ধরেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির ছিল না।
তবে চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের মধ্য দিয়ে কয়েক দশক পর সেই দণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া আবার ফিরে এলো।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট সোমবার এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যেভাবে রাজনীতিবিদদের ধরে ফাঁসি দিয়েছে, তাতে দেখা গেছে মানবাধিকারের প্রতি দেশটিতে শাসকদের ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই।
নিজ দেশের জনগণের প্রতি এ ধরনের বর্বর ও অমানবিক আচরণে বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। তারা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কথায় কর্ণপাত করেনি।
জান্তা সরকার বলেছে, কারা প্রথা অনুযায়ী এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে কোথায় এ দণ্ড কার্যকর হয়েছে তা নিয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে গত বছর ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাসহ অনেককে গ্রেফতার করে সামরিক জান্তা। বেশ কজনকে দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সাবেক এমপি ফিও জেয়া থাও গ্রেফতার হয়েছিলেন গত নভেম্বরে। এর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে রায় ঘোষণা করা হয়। সামরিক আদালতের রায়ে গণতন্ত্রীকর্মী কাউ মিন উকেও দেওয়া হয় একই দণ্ড।
বাকি দুজনকে দণ্ড দেওয়া হয়েছিল এক নারীকে হত্যার মামলায়। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির সেনাবাহিনী।
এ সময় আটক করে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ অনেককে।
এর পর থেকেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে মিয়ানমার। বিক্ষোভ দমনে কঠোর হয় সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় বহু বিক্ষোভকারীকে।
ইউআর/