ভারতের কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীসহ ৪ ঘণ্টা আটকে ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। এ সময় ফ্লাইটের ভেতরে থাকা যাত্রীদের বের হতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সেসময় বিদ্যুতের কারণে বিমানের এসিও বন্ধ ছিল।
সোমবার রাত ৯টা থেকে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৯৬ ফ্লাইটটিতে এ ঘটনা ঘটে।
যান্ত্রিক ত্রুটি সরিয়ে সোমবার রাত পৌনে ২টার দিকে ১৫৮ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় নামে উড়োজাহাজটি। ওই ফ্লাইটের যাত্রী ছিল চলচ্চিত্র নির্মাতা রেদোয়ান রনি।
তিনি এ অভিজ্ঞতাকে ‘বিভীষিকাময়’ উল্লেখ করেন।
তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, বারবার ইঞ্জিনে ত্রুটি কিন্তু সব যাত্রী তুলে বন্দি করে রেখেছে প্লেনে। ইলেকট্রিসিটি নাই তাই এসিও বন্ধ, গরমে সবাই সিদ্ধ। কিন্তু কোনো যাত্রীকে নামতেও দেওয়া হচ্ছে না। বাচ্চা-কয়োজ্যেষ্ঠদের কথা নাইবা বললাম সাধারণ যাত্রীরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
গত কিছু দিনে বার বার জটিলতায় পড়া বিমান এ ঘটনার পর নতুন করে সমালোচনার মধ্যে পড়েছে। যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ত্রুটি ধরা পড়ার পর বিমানের ভেতরে ওই গরমের মধ্যে তাদের আটকে রাখার কারণে।
এ বিষয়ে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, ইমিগ্রেশন শেষে উড়োজাহাজে চড়া যাত্রীদের আর নামার সুযোগ থাকে না।
রেদোয়ান রনি তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘রাত ৮.৩০টার ফ্লাইট অবশেষে ছাড়লো রাত সাড়ে ১২টায়। তারপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো ঢাকা এয়ারপোর্টে এসে আবার ১ ঘণ্টা সব যাত্রীকে অপেক্ষা করিয়ে বেল্টে লাগেজ ছাড়লো। দেখার কেউ কি আছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সেঃ কিভাবে কারা চালাই এই বিমান?
রেদোয়ান রনির এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল বিমানের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দারের কাছে। তিনি বলেন, ড্যাশবোর্ডে সংকেত দেখে ফ্লাইট স্থগিত করেন। তারপর ভারতের জেট এয়ারের প্রকৌশলীদের খবর দেওয়া হয়। তারা ওটা প্রাথমিকভাবে মেরামত করে দেন। এরপর উড়োজাহাজটির পাইলট আবারও ওড়ার প্রস্তুতি নিলে এই সংকেত দিতে শুরু করে। এরপর ওই প্রকৌশলীদের আবার ডাকা হলে তারা এবার সেইফটি রুল অনুসারে উড়োজাহাজের পাওয়ার কানেকশনগুলো বন্ধ করে কাজটা করেছেন। সে কারণে পাওয়ার অফ ছিল।
ফলে তখন এসি কাজ করেনি। এখন প্রকৌশলীরা যতটুকু সময় নিয়েছেন। তবে এটা চার ঘণ্টা না, প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা এ রকম ছিল। যাত্রী নিয়ে রাত ১টা ৪২ মিনিটে উড়োজাহাজটি ঢাকায় পৌঁছায়।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্যে যাত্রীদের নামানোও যায়নি। ওদের (বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের) একটা বিধিনিষেধ থাকে যে ইমিগ্রেশন শেষে অনবোর্ড হওয়ার পরে যাত্রীদের আর নামতে দেওয়া হয় না।
তাহেরা খন্দকার বলেন, মঙ্গলবার বিকালে সেটি ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকার রুটে উড়বে।
কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে কলকাতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তবে ফ্লাইট ছাড়ার আগ মুহূর্তে কারিগরি ত্রুটির কথা জানানো হয় এবং বিলম্বে ছাড়বে বলা হয়।
ঘণ্টাখানেক পর ফ্লাইটটি আবারও ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার প্রস্তুতি নেয়। তবে রানওয়েতে গিয়ে ফ্লাইটটি আবারও কারিগরি ত্রুটির কথা বলে উড্ডয়ন বাতিল করে বোর্ডিংয়ের কাছে ফিরে আসে।
ইউআর/