‘এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স’ করোনার থেকেও বড় হুমকি: প্রধানমন্ত্রী

করোনার কারণে ইতোমধ্যে বিশ্বে ৩০ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। কিন্তু এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য করোনার থেকেও বড় হুমকির কারণ হবে বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডারস গ্রুপ অন এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও জানান, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। শুধু মানুষ নয়, সেই সঙ্গে পৃথিবীর সকল প্রাণী, গাছ এবং সর্বোপরি আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এর কারণে।

বাংলাদেশ এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্সের গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স কন্টেইনমেন্ট (এআরসি) বিষয়ে আমরা ৬ বছর মেয়াদী দীর্ঘ জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এর মাধ্যমে মানুষের চিকিৎসার জন্য, গৃহকার্যে, মৎস্য চাষে এবং কৃষি ক্ষেত্রে এন্টিমাইক্রোবিয়াল ব্যবহার পরিমিত পরিমাণে করবে। ২০১৯ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ‘গ্লাস’ প্লাটফর্মে এএমআর-এর তথ্য প্রদান করছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে গণমাধ্যমের সহায়তা নিচ্ছি আমরা।

তিনি বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স যে কারো জন্য ক্ষতিকর এবং এই ক্ষতি আমাদের অর্থ সামাজিক অবস্থা বা ভৌগলিক অবস্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এএমআর নিশ্চিতে আমাদের ইনফেকশন প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (আইপিসি) বিষয়ে কড়া নজরদারি থাকতে হবে। ‘গ্লোবাল অ্যাকশন প্লান-২০১৫’- ঘোষিত এএমআর ব্যবস্থাপনা এবং ২০১৬ সালে জাতিসংঘ রাজনৈতিক ঘোষণায় এএমআর ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবল তা সম্ভব।

জিএলজি-এএমআর এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এবং গত সপ্তাহে আয়োজিত সাধারণ সভায় প্রদান করা কর্ম পরিকল্পনার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এএমআর-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এ বিষয়ে আরও সাতটি পরামর্শ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এআরসি লক্ষ্য অর্জনের জন্য বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া, তা পর্যবেক্ষণে রাখা এবং এ বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।

এ ছাড়া এন্টিমাইক্রোবিয়ালের যথাযথ ব্যবহারের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে পৃথক নিয়ম ও নীতি তৈরি করা; কার্যকর এবং যথাযথভাবে এএমআর ব্যবহারের জন্য বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া এবং নিজেদের মধ্যে এএমআর পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়ানো; প্রযুক্তি পরস্পরের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া এবং ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের মাধ্যমে সকলের জন্য এন্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য মেডিকেল সুবিধাগুলো ক্রয়সীমার মধ্যে রাখা; নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোর কথা মাথায় রেখে এএমআর নিয়ন্ত্রণ ও এর প্রভাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যথাযথ এবং টেকসই অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করা; এএমআর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাখতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং সর্বোপরি ক্রয়সীমার মধ্যে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সেবা সুবিধা ব্যবহারের ব্যবস্থা করার পরামর্শ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এএমআর গ্লোবাল লিডার গ্রুপ এর কো-চেয়ারম্যান হিসেবে এএমআর ব্যবহারকে বৈশ্বিক পলিটিকাল এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্তের করা এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরতে বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একত্রে কাজ করে যাওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img