ঢাকা ওয়াসা এখন রাজধানীকে ১০টি জোনে ভাগ করে এলাকাভিত্তিক ও গ্রাহকভিত্তিক পানির নতুন দাম নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে। তবে প্রস্তাবিত দামের বিষয়ে গ্রাহক পর্যায়ে আরও আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। রাজধানীর নিম্নবিত্ত গ্রাহকদের জন্য প্রায় আড়াই টাকা কমিয়ে এবং উচ্চবিত্তদের জন্য ২২ টাকা বাড়িয়ে পানির দাম সমন্বয়ের চিন্তা করছে ঢাকা ওয়াসা।
বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা নিচ্ছে ঢাকা ওয়াসা। আর বাণিজ্যিক গ্রাহকদের জন্য ৪২ টাকা। বর্তমানে এক হাজার লিটার পানি উৎপাদনে ওয়াসার খরচ হয় ২৫ থেকে ২৬ টাকা।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা ওয়াসার এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণ বিষয়ক টেকনিক্যাল স্টাডির (কারিগরি গবেষণা) ফলাফল’ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান ওয়াসার কারিগরি উপদেষ্টা মো. তাহমিদুল ইসলাম।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান।
ওয়াটার এইড এবং ঢাকা ওয়াসা এই গবেষণা করে। ওয়াসার কারিগরি উপদেষ্টার তথ্য অনুযায়ী, উচ্চবিত্ত আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ প্রতি হাজার লিটারে উচ্চবিত্তদের জন্য দাম বাড়ছে ২২ টাকা ৩২ পয়সা। ওয়াসার তথ্যমতে, নগরে ওয়াসার উচ্চবিত্ত গ্রাহক শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের পানির দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ৩১ টাকা ২৫ পয়সা। এই ক্যাটাগরির গ্রাহক সংখ্যা ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
রাজধানীর মধ্যবিত্ত মানুষ পাবে উৎপাদন মূল্যে পানি। যার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা, যা আগের দামের চাইতে ৯ টাকা ৮২ পয়সা বেশি। ওয়াসার মধ্যবিত্ত গ্রাহক ৪ শতাংশ। নিম্ন মধ্যবিত্তদের জন্য দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ৩ টাকা ৫৭ পয়সা। প্রস্তাবিত দাম ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা। ওয়াসার নিম্ন মধ্যবিত্ত গ্রাহকই সর্বোচ্চ, শতকরা ৭৯ দশমিক ৪ শতাংশ।
নিম্ন আয়ের মানুষ একই পরিমাণ পানির জন্য বিল দেবেন ১২ টাকা ৫০ পয়সা হারে। ফলে তাদের প্রতি হাজার লিটারে পানির দাম কমছে ২ টাকা ৬৮ পয়সা।
ওয়াসার সাড়ে ১১ শতাংশ বাণিজ্যিক গ্রাহক বর্তমানে প্রতি হাজার লিটার পানির জন্য ৪২ টাকা পরিশোধ করছেন। প্রস্তাবিত দাম অনুযায়ী, সেই বিল ৮ টাকা বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ টাকায়। এর বাইরে উৎপাদন মূল্যের সমান অর্থাৎ ২৫ টাকা হারে বিল পরিশোধ করবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।
নতুন মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে ওয়াসার পানি উৎপাদন মূল্য ও বিক্রি মূল্যের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে- তা সমান করা যাবে। অর্থাৎ এ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে না বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
ইউআর/
