বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আবরার ফাহাদের ছোটভাই আবরার ফাইয়াজ। বুধবার (১৩ জুলাই) বেলা ২টা ২০ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবরার ফাইয়াজ তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে পোস্ট করেছেন।
ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিবারের সবার মতামতের ভিত্তিতে আমি বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু আপনারা অনেকেই নিজেদের মতামত জানিয়েছিলেন তাই এই বিষয়টি আপনাদের জানানো। সত্যি বলতে বাসার কেউই সরাসরি আইইউটি বা বুয়েটে ভর্তির বিষয়ে এমন কিছু বলেনি। প্রায় সবাই বলেছে যেখানে আমার ইচ্ছা সেখানেই ভর্তি হতে। তাই বলা যায়, আমার ইচ্ছা অনুসারেই এখানে ভর্তি হতে চাওয়া।’
পোস্টে তিনি আরও জানান, ‘একটা বিষয় আসলে পরিষ্কার করার দরকার, সবাই প্রথম থেকেই যে বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন যে বুয়েটে গেলে নিরাপত্তার কি হবে, এটা আসলে আমি কখনও ভাবিনি। আবার ভাইয়ার কথা মনে পড়বে এজন্য মানসিকভাবে ভেঙে পড়বো, এরকম কিছু নিয়েও চিন্তিত ছিলাম না। আমার ইচ্ছা আছে ভাইয়ার শের-এ বাংলা হলে সিট পেলে থাকবো।’
নিজের সফলতার পেছনে যে সব মানুষ আছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ফাইয়াজ আরও বলেন, ‘আপনারা অনেকেই আমাকে নিজের ছোটভাই ভেবে অনেক পরামর্শ দিয়েছেন। অনেকেই অনেক কিছু বোঝানোর জন্য নিজের মূল্যবান সময় ব্যয় করেছেন। আমি সত্যিই আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আর কিছু মানুষের ধন্যবাদ একটু বেশিই প্রাপ্য। তারা হলেন আমার শিক্ষক। সত্যি বলতে গত প্রায় দুই বছর ৯ মাসে আমি যেখানেই একদিন হলেও পড়েছি প্রত্যেকেই নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে আমাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন। বেশকিছু ক্ষেত্রে আমি অবাক হয়েছি, কারণ যার সঙ্গে হয়তো আমার প্রথমবার দেখা হয়েছে, ব্যবহারে মনে হয়েছে যেন আমরা কত পরিচিত। আর পড়ালেখার বিষয়ে তাদের অবদান তো ছিলই। এমনকি সাবজেক্ট পছন্দের ক্ষেত্রেও তারা অনেক সাহায্য করেছেন। আল্লাহ তাদের প্রত্যেককেই ভালো, সুস্থ রাখুক এটাই চাই সবসময়। দোয়া করবেন যেন আল্লাহ আমাকে সঠিক পথ দেখান সবসময়।’
গত ৪ জুলাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটেও ভর্তির সুযোগ পান। বর্তমানে ফাইয়াজ গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ে ভর্তি হয়ে আছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগ কর্মীদের মারধরে মারা যান ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বাদী হয়ে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর আবরার ফাহাদকে হত্যার দায়ে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। আবরার ফাহাদের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডে।
ইউআর/