যুক্তরাজ্যের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জনসনের ওপর বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের পর একটি জরিপ চালিয়েছে জরিপ সংস্থা ইউগভ। এতে অংশগ্রহণকারীদের ৬৯ শতাংশই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরিস জনসনের পদত্যাগ করা উচিত। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
২০১৯ সালে জনসনকে যারা ভোট দিয়েছেন তাদের মধ্যেও ৫৪ শতাংশ এখন তার পদত্যাগ চায়।
পদত্যাগ না করে বরিস জনসনের উচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া। এমন মত দিয়েছেন জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ১৮ শতাংশ।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৮ শতাংশ অবশ্য মনে করছেন, বরিস জনসন পদত্যাগ করবেন না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আকস্মিকভাবে অল্প সময়ের ব্যবধানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। তাদের এই পদত্যাগের ফলে বরিস জনসনের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠার পাশাপাশি কনজারভেটিভ সরকারের সংকট আরও প্রকট হলো।
বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, বরিস জনসন এর আগে এতো বড় বিপদের মুখে কখনও পড়েননি। এখন এই সংকট কাটিয়ে তিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন কি না সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যৌন অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন এমপি ক্রিস পিঞ্চারকে সরকারে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে জনসন দুঃখ প্রকাশ করার পর এই দুই মন্ত্রী তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ উঠার পর গত সপ্তাহে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে তার এমপি পদ বাতিল করা হয়। জনসন স্বীকার করেছেন, এমন একজন ব্যক্তি যে সরকারি পদের জন্য যোগ্য নন সেটা বুঝতে না পেরে তিনি ভুল করেছেন।
এর আগেও বরিস জনসনের বিরুদ্ধে কোভিড মহামারির বিধিনিষেধ ভেঙে পার্টি আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় পুলিশ তাকে জরিমানাও করেছে। দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে লেখা পদত্যাগপত্রে সরকার পরিচালনার মান বজায় রাখতে জনসনের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সাজিদ জাভিদ বলেছেন, একের পর এক কেলেঙ্কারির পর তিনি মনে করেন না যে, এই সরকারের সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখতে পারবেন। তিনি বলেন, অনেক এমপি এবং জনগণ জাতীয় স্বার্থ বজায় রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সক্ষমতার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
ঋষি সুনাক বলেছেন, জনগণ আশা করে যে যথাযথভাবে, দক্ষতা ও গুরুত্বের সঙ্গে সরকার পরিচালিত হবে।
গতমাসেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দলের এমপিদের এক আস্থা ভোটে জয়ী হন। যদিও দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এমপি তার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য ও অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের পর বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টার্মার বলেন, ‘এটা এখন পরিষ্কার যে, সরকার ভেঙে পড়ছে।’
ইউআর/