রোগীর চাপ কমেছে ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালে

করোনা রোগীর চাপ কমেছে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে। অন্যান্য দিন আইসিইউতে সিট ফাঁকা পাওয়া না গেলেও গত কয়েকদিন ধরে সেই চাপও অনেকটাই কমেছে হাসপাতালটিতে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে অবস্থান করে দেখা গেছে, জরুরি বিভাগে ভর্তি হতে আসা রোগীর তেমন ভিড় নেই। দীর্ঘ সময় হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে অপেক্ষা করে দুই-একজন রোগী হাসপাতালটিতে আসতে দেখা গেছে।

প্রতিদিন হাসপাতালটিতে রোগীর হালনাগাদ তথ্য জানাতে ব্রিফ করেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন। কিন্তু আজ (রোববার) সেই আনুষ্ঠানিক ব্রিফ অনুষ্ঠিত না হলেও তিনি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যার হালনাগাদ তথ্য জানিয়েছেন। সেই তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১২৪ জন। যা গতকাল ছিল ১৩৩ জন।

আজ জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ২৭ জন, যারমধ্যে পুরুষ ১৬ জন, মহিলা ১১ জন। গতকাল (শনিবার) জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ২২ জন। এছাড়া আইসিইউতে আজ ভর্তি রয়েছেন ৭৫ জন রোগী, গতকাল ছিল ৭৬ জন।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের সামনে দায়িত্বরত এক আনসার সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে যেমন প্রচুর রোগীর ভিড় হতো, সেই তুলনায় কয়েকদিন ধরে রোগীর চাপ কম দেখা যাচ্ছে। এছাড়া আগে এই হাসপাতালের আইসিইউ বেড কখনও ফাঁকা থাকতো না, কিন্তু এখন বেড ফাঁকা রয়েছে। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোগী এসেছে দু-একজন। অন্য দিনের তুলনায় আজ রোগী বা রোগীর স্বজনদের ভিড় নেই হাসপাতালটিতে। আগে একটির পর একটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে আসতো। সেই চাপ অনেকটাই কমে গেছে।

রোববার (২ মে) হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন মোট ৭৫ জন। এরমধ্যে আইসিইউ-৩তে ১১ জন, আইসিইউ-৪তে ১০, আইসিইউ-৫তে ১০, আইসিইউ-৬তে (এইচডিইউ) ২৪ এবং আইসিইউ-৭তে (এইচডিইউ) ২০ জন ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া পুরো হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি আছেন ১২৪ জন। যার মধ্যে জরুরি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ২৭ জন রোগী।

জানা গেছে, এক হাজার শয্যার হাসপাতালে ২৫০টি শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাইকারি কাঁচাবাজারের ভবনে স্থাপন করা এক হাজার বেডের এই হাসপাতালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিএনসিসি ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’। গত ১৮ এপ্রিল হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়।

হাসপাতালটিতে ২১২ শয্যার আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) থাকবে। এছাড়াও ২৫০ শয্যার এইচডিইউ (উচ্চ নির্ভরতা ইউনিট), ৫০ বেডের জরুরি বিভাগ (৩০টি পুরুষ, ২০টি নারী) ও ৫৪০ (সিঙ্গেল) রুমের আইসোলেশন ব্যবস্থা এখানে রয়েছে। এই রুমগুলো হবে অনেকটা কেবিনের মতো। দ্রুতই বেডের সংখ্যা আরও বাড়বে।

রোগীরা যেভাবে ভর্তি ও সেবা নেবেন

কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন বা উপসর্গ আছে- এমন রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা প্রথমে ট্রায়াজে প্রবেশ করবেন। সেখানে দুটি জোন আছে। যাদের মৃদু উপসর্গ আছে বা হেঁটেই আসতে পারছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তাদের যদি ভর্তির প্রয়োজন না হয় তবে ভর্তি করা হবে না। সেক্ষেত্রে অবশ্যই তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হবে। পরে এসে তিনি আবার রিপোর্ট করতে পারবেন।

ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাপনা রয়েছে। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসবেন তারা ট্রায়াজ-২তে চলে যাবে। সেখানে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা আছে। ছয় বেডের একটা আইসিইউ সেটাপ আছে নিচ তলাতেই। সেখানে ভেন্টিলেটরের সুযোগও থাকবে। আর তাই ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের স্ট্যাবল হওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঠিয়ে দেওয়া হবে দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ডে। সেখানে যদি কারও অবস্থা খারাপ হয় তবে তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে আইসিইউ বা এইচডিইউতে। আর যদি একটু স্ট্যাবল হয় বা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসে তবে তাদের কেবিনে দিয়ে দেওয়া হবে। এই কেবিনগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেনসহ হাই-ফ্লো নজেল ক্যানোলা সুবিধা থাকবে। এক্ষেত্রে মনিটরের ব্যবস্থাও করা হবে খুব দ্রুত। ওখানে তারা কিছুটা স্ট্যাবল হলে তাদের ধীরে ধীরে ডিসচার্জ হওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img