ইউক্রেনের একজন সম্পদশালী রুশপন্থী রাজনীতিককে গ্রেফতারের দাবি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর গৃহবন্দিত্ব থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে বুধবার সকালে এক ভাষণে ফের তার গ্রেফতার হওয়ার কথা জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গ্রেফতাকৃত ওই রাজনীতিকের নাম ভিক্টর মেদভেদচুক। অনলাইনে তার একটি ছবি পোস্ট করেছেন জেলেনস্কি। এতে হ্যান্ডকাফ পরা বিক্ষিপ্ত চেহারার ভিক্টর মেদভেদচুককে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে।
টেলিগ্রামে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী একটি বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। সাবাশ!’
ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান ইভান বাকানভ বলেছেন, রুশপন্থী এই আইনপ্রণেতাকে আটকের জন্য একটি বহু স্তরবিশিষ্ট বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এই অভিযান ছিল বিপজ্জনক।
টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘কোনও বিশ্বাসঘাতক শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না। ইউক্রেনের আইন অনুযায়ী, সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।’
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে তার দেশের শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর জয়লাভের ব্যাপারেও আশাবাদ জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের লক্ষ্য রাজধানী কিয়েভ থেকে পূর্ব ইউক্রেনে সরিয়ে নেওয়ার পর মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) প্রথম প্রকাশ্য বক্তব্য দেন পুতিন। এই ভাষণে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে অভিযানের ‘মহৎ লক্ষ্য’ অর্জিত হবেই। পুতিনের বক্তব্যে ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার ইঙ্গিত উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগ এবং পুরো ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চেয়ে কিয়েভ শান্তি আলোচনাকে ব্যাহত করেছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের লক্ষ্য অর্জিত হবে কিনা জানতে চেয়ে রুশ মহাকাশ সংস্থার এক কর্মীর প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, অবশ্যই। এই বিষয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই।
ইউক্রেন বলছে, ২০১৪ সালে রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়া দখলের পর থেকেই তারা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়াই করছে। এর মধ্যেই ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুইটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। এর কদিনের মাথায় ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। এভাবে নৃশংস সাম্রাজ্যবাদী স্টাইলে একটি সার্বভৌম দেশের ভূমি দখলের এই যুদ্ধের সমালোচনা করে আসছে পশ্চিমারা।
ইউআর/