রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পুলিশের সামনেই যুবককে কোপানোর চেষ্টা

রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা রিয়াজবাগে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতেই এক যুবককে কোপানোর চেষ্টা চালানো হয়েছে। স্থানীয় ওই যুবকের নাম আমির হোসেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি।
রিয়াজবাগের স্থায়ী বাসিন্দা আশফাকুর রহমান দিনের খবরকে বলেন, গতকাল ২৭শে এপ্রিল মঙ্গলবার রিয়াজবাগ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আমির হোসেনের বাসার ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে মোবাইল ছিনতায়ের ঘটনা ঘটে, খিলগাঁও তালতলা মার্কেট থেকে।
খবর পেয়ে আমির হোসেন তার ভাড়াটিয়াকে নিয়ে দ্রুত ওই স্থানে যান এবং ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। পরে মোবাইলটি উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেন তার ভাড়াটিয়াকে। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওই ছিনতাইকারী তার স্বজন, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী রনি ওরফে জোলা রনিকে জানায়। জোলা রনি তখনই চাইনিজ চা-পাতি হাতে রিয়াজবাগ এলাকায় ছুটে আসে এবং আমির হোসেনকে খুঁজতে থাকে।
তখন স্থানীয় আরও মানুষের সহযোগিতায় আমির হোসেন জোলা রনিকে ধরে ফেলে এবং নিরস্ত্র করে। এসময় পালানোর জন্য জোলা রনি এলোপাতাড়ি চা-পাতি চালাতে থাকে। এতে আমির হোসেনের ছোট ভাই আসাদ হোসেন জয়ের হাত কেটে যায়।
স্থানীয় ওই বাসিন্দা আরও অভিযোগ করেন, এসময় রামপুরা থানার একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) তার কয়েকজন সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু অস্ত্র হাতে জোলা রনিকে আসতে দেখেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি। উল্টো এলাকাবাসী  জোলা রনিকে ধরাসায়ী করার পর ওই এসআই উপস্থিত জনতাকে পিটানো শুরু করেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল জনাব সাখাওয়াত হোসেন শওকত।
তিনি পৌঁছালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। ইতিমধ্যেই রামপুরা থানা থেকে আরও তিন- চারটি পুলিশের গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে পৌছায়। উপস্থিত মানুষদের ভাষ্য মতে, এসময় অন্যান্য পুলিস সদস্যরা  অভিযুক্ত ওই এসআই কে তিরস্কার করেন। এসময় অবস্থা বুঝে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওই এসআই।
রাত ১০ টা থেকে নিয়ে শুরু হওয়া এই ঘটনা চলে প্রায় মধ্য রাত পর্যন্ত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্য টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ীদের এরকম সহযোগিতা করে থাকেন। যার ফলে ডিউটিরত অবস্থায়ও তার পোশাকে কোন নাম ফলক ছিল না।
মাদক ব্যবসায়ী রনি, ওরফে জোলা রনি খিলগাঁও তালতলা সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের প্রাক্তন মাদক ব্যবসায়ী রাজীবের বিশস্ত সহচর ছিল। কয়েকবছর পূর্বে রাজীব কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর, তালতলা মার্কেটে মাদকের বিরোদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় মতিঝিল বিভাগের পুলিশ।
এতে করে প্রায় বন্ধ হয়ে যায় তালতলায় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অবাধ মাদক ব্যবসা। জোলা রনিও কিছুটা নিস্ক্রিয় হয়ে যায় সে সময়। কিন্তু বর্তমানে সে আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, দুজন পুরুষ এবং দুজন মহিলা নিয়ে গড়ে তুলেছে সে তার ছিনতাইকারী বাহিনী। যারা তালতলা, নবীনবাগ, ছাহেরুনবাগ, নতুনবাগ সহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ছিনতাই করে আসছে। এছাড়া এই গ্রুপ দিয়েই একটু একটু করে সে আবার গড়ে তুলছে তার মাদক ব্যবসা।
আর তার এই কাজে যেই বাধা হয়ে আসে তাকেই সে এই ধরনের ভয়ভীতি এবং দুষ্কৃতকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা হয়রানির করে থাকে।
- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img