তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের পর সংগীত জগতের শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আফগানিস্তানে ছেড়ে পালিয়েছেন। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান আহমাদ সারমাস্তির বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।
তাদের ভয় ছিল, আফগানিস্তানের নতুন শাসকরা সংগীত জগতের ওপর ধরপাকড় চালাতে পারেন। আহমাদ সারমাস্তি বলেন, সোমবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদের প্রতিষ্ঠানের ১০১ সদস্য কাতারের রাজধানী দোহায় অবতরণ করেছেন। তাদের অর্ধেকের বেশি নারী। এসব সংগীতশিল্পীর পর্তুগালে উড়াল দেওয়ার ইচ্ছা আছে।
কাবুলে কাতারের দূতাবাসের সহায়তায় ছোট ছোট গ্রুপে তারা দোহার বিমানবন্দরে নামেন। এএফপির খবরে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের জন্য প্রথম বাধাটি ছিল কাবুল বিমানবন্দরে ভিসা প্রক্রিয়া নিয়ে তালেবানের জেরা। কিন্তু কাতারি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সহায়তায় তার সুরাহা হয়েছে।
এরপর নারী শিল্পীদের বলা হলো, তার দেশ থেকে বের হতে পারবেন না। কারণ তাদের হাতে অস্থায়ী জরুরি পাসপোর্ট ছিল। সাধারণ এ ধরনের পাসপোর্ট কর্মকর্তাদের সরবরাহ করা হয়।
কিন্তু আবারো কাতারি কর্মকর্তাদের সহায়তায় তারা বাধা কাটিয়ে উঠে বিমানে চড়তে সক্ষম হন। আহমাদ সারমাস্তি, তাদের বিদায়ে আমাদের চোখ পানিতে ভরে গিয়েছিল। আমি অনবরত কেঁদেছি। আমার পরিবারও কেঁদেছে। আমার জীবনে এটিই ছিল সবচেয়ে সুখের সময়।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার অনেক আনন্দের স্মৃতি আছে। আন্তর্জাতিক কনসার্টের বিভিন্ন ট্যুরে তারা অভিনন্দিত হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের বিমান উড্ডয়ন করেছে, সেই খবর শোনার আনন্দ ও অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দীর্ঘ পরিকল্পনার পর তারা দেশ ছেড়েছেন। আহমাদ সারমাস্তি আরও বলেন, কাবুল তালেবানের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর সংগীত ও সংগীত শিল্পীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য শুরু হয়। আফগানিস্তানের নাগরিকেরা আবার নীরব হয়ে যান।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনামালে গান সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবারে ক্ষমতায় আসার পর পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সংগীত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশে থেকে যেতে বলেছিল তালেবান। কিন্তু দুমাস পার হওয়ার পরও তাদের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি।