স্কুলে এসেই যে শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তার সত্যতা বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতি দিবস উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর উপমন্ত্রী এ কথা বলেন।
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে। স্কুল খোলার পাঁচ দিন পর ১৭ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ৪ নম্বর ফেরধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।
চার দিন পর ২১ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জ পৌরসভার ১০২ নম্বর বীণাপাণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর করোনা শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। পরদিন মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এছাড়া একইদিন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঁচ শিশু শিক্ষার্থীর করোনা শনাক্ত হয়।
শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, স্কুলে এসেই যে শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে তার সত্যতা বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় দেখেছি শিক্ষার্থীরা করোনা আক্রান্ত হয়েছে। আমরা সেখানে ব্যবস্থা নিয়েছি।
মুহিবুল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীরা ঘরে থাকলে করোনা সংক্রমণ হতো না বা স্কুলে যাওয়ার কারণে হয়েছে এই কথার এখন পর্যন্ত কোনো সত্যতা মেলেনি। শিক্ষার্থীরা স্কুলে না গেলেও আত্মীয়-স্বজনের বাসায়, বিনোদনের জায়গায় সবখানেই যাচ্ছিল। আর যেসব জায়গায় শিক্ষার্থীদের করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে সেখানে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতি দিবস প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, মাস্টারদা সূর্যসেন, প্রতীলতা ওয়াদ্দেদার থেকে শুরু করে যারা ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবে অংশগ্রহণ নিয়েছেন, সেই সব বীরদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বগাথা নতুন জাতীয় পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রীতিলতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
উপমন্ত্রীর সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী শহীদ ব্যক্তিত্ব প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে তখনকার ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং জীবন বিসর্জন করেন।
১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব দখলের সময় তিনি ১৫ জনের একটি বিপ্লবী দল পরিচালনা করেন। এই ক্লাবটিতে একটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিলো যাতে লেখা ছিলো ‘কুকুর এবং ভারতীয়দের প্রবেশ নিষেধ’। প্রীতিলতার দলটি সেই ক্লাবটিতে আক্রমণ করে এবং পরবর্তীতে পুলিশ তাদের আটক করে। পুলিশের হাতে আটক এড়াতে প্রীতিলতা সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।