চট্টগ্রামকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে, সতেজ রাখতে হলে সিআরবিকে রক্ষা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত বিষয়টি জানলে জনস্বার্থ বিরোধী এই প্রকল্প বাতিলে উদ্যোগী হবেন।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিআরবি রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রামের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, বাইরে যথন গরমের তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি থাকে-তখন এই সিআরবিতে তাপমাত্রা থাকে ৪০ ডিগ্রির কম। সিআরবি হলো প্রাকৃতিকগত ভাবে আল্লাহর অকৃত্রিম দান। হাজার কোটি টাকা দিলেও এরকম একটি সিআরবি বানানো যাবেনা। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সিআরবি ভিক্ষা চাচ্ছি। আমরা হাসপাতাল চাই-তবে এই হাসপাতাল সিআরবি থেকে দূরে হোক।
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০০৮ সালে ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান চূড়ান্ত পূর্বক ডিসেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তারই ধারাবাহিকতায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বাংলাদেশ গেজেটভুক্ত প্রজ্ঞাপনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-চউক প্রণিত ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানে সিআরবিকে কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সিআরবিকে প্রোটেকটেড এরিয়া হিসেবে সংরক্ষনের নির্দেশ দেয়া হয়। সেই হিসেবে সিআরবিতে কর্মাশিয়াল ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেয়া যাবে না। সিআরবিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনা বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ সংবিধান পরিপন্থী কাজের শামিল। হেরিটেজ হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়া সিআরবিতে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিবর্তন করে এই ধরনের স্থাপনা নির্মাণ সাংবিধানিক আইন লংঘন করার শামিল, যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য আমার না হওয়া পর্যন্ত এই লড়াই-আন্দোলন চলবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুচ বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মিত হলে পরিবেশ দূষণ ঘটবে এবং পুরো সিআরবি এলাকাটির প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বলয় হুমকির মুখে পড়বে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সিআরবির অনুপম ও প্রশান্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে। সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতেই, সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতেই একটি স্বার্থান্বেষী মহল চট্টগ্রামের সিআরবিতে স্থাপনা নির্মাণের নামে লুটপাট ও বাণিজ্য ষড়যন্ত্র করছে। যারা সিআরবির প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে সখানে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষ নেবেন, তারা চট্টগ্রামের তথা দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
ছাত্রলীগ নেতা মাহমুমুদুল করিম’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক হোসাইন কবির, বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, যুগ্ম সদস্যসচিব রাশেদ হাসান, স্বপন মজুমদার, আওযামী লীগ নেতা হাসান মনসুর, আবৃত্তিকার প্রনব চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রাশেদুল আলম রাশেদ, আফম মোদাচ্ছের আলী, সাবেক ছাত্রনেতা শিবু প্রসাদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল আজিম রনি, নারী নেত্রী হাসিনা আক্তার টুনু, গাজী জসিম উদ্দিন, মিনু মিত্র, রেজাউল আলম রিজন, এমআর হৃদয়, হোসেইন আহমেদ, রুবেল, ইকবাল কায়সার, জাহেদ হোসেন সাইমুন, আনোয়ার হোসেন পলাশ, মাইমুন উদ্দিন মামুন, রুপম সরকার, বিপু ঘোষ, অনিক, সোহেল, জামসেদ হোসেন প্রমুখ।