বঙ্গবন্ধুর খুনি খন্দকার মোশতাকের ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ বাবুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। জালিয়াতি করে পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি বিক্রিসহ নানা ধরনের প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় তার বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি করা হয়।
মঙ্গলবার বিকালে কুমিল্লার ৩নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম মাহবুব খান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বুধবার বিকালে মোশতাক পুত্রের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী খন্দকার জাবির আহম্মেদ সারোয়ার।
এ সময় আদালত ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করতে দাউদকান্দি থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। তবে অভিযুক্ত ওই আসামি দীর্ঘদিন কানাডায় পালিয়ে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, খুনি মোশতাকের পিতা হযরত খন্দকার কবির উদ্দিন আহামেদ ছিলেন একজন পীর। রয়েছে তার ভক্তবৃন্দ। মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ ছেলে এবং পাঁচ মেয়েসহ রেখে গেছেন বিশাল সম্পত্তি। এরমধ্যে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কিছু সম্পত্তি কল্যাণমূলক কাজের জন্য ট্রাস্টের নামে লিখে দেওয়া হয়।
এছাড়া ওয়ারিশ সূত্রে বংশের সব সদস্যরা বাকি সম্পত্তির মালিক হলেও কবির উদ্দিনের সপ্তম সন্তান খুনি মোশতাকের একমাত্র ছেলে খন্দকার ইশতিয়াক আহম্মেদ বাবু বংশের সব সদস্যদের সম্পত্তি জোরপূর্বক বেদখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় খন্দকার কবির উদ্দিনের নামে ট্রাস্টের স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হয়ে বাবু ওই স্টেটের কার্যালয়ে নিজের এবং স্ত্রী সন্তানদের ছবি টানিয়ে রেখেছেন। কিন্তু কবির উদ্দিনের অন্যসব ওয়ারিশগণকে ওই সম্পত্তি এবং বাড়িসহ মাজারে প্রবেশ করতে দেয় না বাবু।
ট্রাস্ট এবং দাদার সম্পত্তি দখলে রাখতে মোশতাক পুত্র এলাকায় একটি বাহিনী গঠন করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কানাডায় বসে ওই বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। এরই মাঝে বেশ কিছু সম্পত্তি জাল দলিল এবং ভুয়া স্বাক্ষরে বিক্রয় করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা এবং স্টেটের উত্তরাধিকারীর অংশিদারিত্ব পেতে কবির উদ্দিনের ওয়ারিশ খন্দকার জাবির আহাম্মেদ সারোয়ার গত বছরের শেষের দিকে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে মোশতাকপুত্র ইশতিয়াক, নাতি ইফতেখার আহমেদ শাদসহ অভিযুক্ত কেয়ার টেকার নিজামুদ্দিনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় মঙ্গলবার মোশতাক পুত্রের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
দাউদকান্দি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আদালত থেকে ওয়ারেন্টের কপি হাতে পেলে আসামি যদি দেশে না থাকে তাহলে সেটার বিষয়েও সিনিয়র অফিসারদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।