বরিশালের সদর ইউএনওর বাসায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন আখ্যা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। এটা সবসময় হয়ে থাকে, নতুন কিছু নয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ছাত্রলীগ আয়োজিত সভায় অংশগ্রহণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, বরিশালের ঘটনা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করেন, তাদের সঙ্গে যে ভুল বোঝাবুঝি, এটা হতেই পারে। এটা নতুন কিছু নয়।
আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমরা যখন রাজাকারের শিরোমনি নিজামীর গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেখেছিলাম, তখন গায়ে চিমটি কেটে দেখতে হয়েছিল- আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছি, নাকি মরে গেছি। আমরা আজ সেই জায়গা থেকে মুক্তি পেয়েছি। আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার পেয়েছি। কয়েকটা খুনি পালিয়ে রয়েছে, আমরা তাদের খুঁজছি। দু-একজনের অবস্থানও জানতে পেরেছি। তাদের দেশে আনার চেষ্টা চলছে। দেশে এনে তাদের শাস্তির রায় কার্যকর করা হবে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা জীবন আন্দোলন সংগ্রাম করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিলেন। স্বাধীনতার পরে তিনি যখন দেশ গড়ে তোলার কাজ শুরু করলেন তখন ঘাতকরা তাকে হত্যা করল। তারা মনে করেছিল- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার আদর্শ, চিন্তা সব কিছু মুছে গেছে। কিন্তু তিনি যে জীবিত মুজিবের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী তারা তা বুঝতে পারেনি।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে আসার পরে তাকে তার বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তিনি বাড়ির বাইরে বসে অঝোরে কেঁদেছেন। আমরা দেখেছি, শুনেছি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর মতোই সারা দেশে ঘুরে বেড়ালেন। বাংলার মাটি ও মানুষের সঙ্গে মিশে গেলেন। বাংলার মানুষ আবারও ঘুরে দাঁড়ালো।
২১ আগস্টের ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সমাবেশ করছিলেন। এই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সারা দেশ যখন গর্জে উঠছিল তখন আবার একটা নীল নকশা ও হত্যাকাণ্ড আমরা দেখলাম। সেদিন গ্রেনেড হামলায় এই এলাকা (বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) আতঙ্কের এলাকায় পরিণত হয়েছিল। সেদিন মানব ঢাল তৈরি করে আমাদের নেতারা বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আড়াল করেছিলেন। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। এই কুচক্রীমহল একের পর এক ষড়যন্ত্র করেছে। যারা জামায়াত, তারাই বিএনপি, তারাই শিবির আবার তারাই স্বাধীনতাবিরোধী। এজন্যই এরা মনে হয় বার বার এই আগস্ট মাসকে বেছে নেয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান হৃদয়।