তুরস্ককে পাশে চায় তালেবান

আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য তুরস্ককে পাশে দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তালেবান মুখপাত্র সোহাইল শাহিন।  তুরস্কের সরকারপন্থি দৈনিক ‘তুর্কিয়া’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

দৈনিক ‘তুর্কিয়া’কে সোহাইল শাহিন বলেন, আফগানিস্তানের সবকিছুই প্রায় তছনছ হয়ে গেছে।  আমরা আমাদের দেশকে আবারও গড়ে তুলব।  এ কাজে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তুরস্ককে।  তুরস্কের সহযোগিতায় পারবে আমাদের সামনে দ্রুত এগিয়ে যেতে।

সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, তুরস্ক অবশ্যই তালেবান সরকারের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ।  মুসলিম বিশ্বে তাদের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আছে।  তা ছাড়া তুরস্ক আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য একটি দেশ।  মুসলিম দেশ হিসেবেও তারা বিশ্বে শক্তিশালী অবস্থানে আছে। তাই আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক অন্য কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। 
এর আগে কাবুল দখলের একদিন পর গত ১৬ আগস্ট তুরস্কের ক্ষমতাসীন সরকারের নিউজ চ্যানেল ‘তুর্ক খবর’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোহাইল শাহিন বলেছিলেন, তুরস্ক আমাদের কাছে একটি ভ্রাতৃপ্রতিম ইসলামি দেশ হিসেবে বিবেচিত।  তুরস্কের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করতে চাই। 
এরপর তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১৯ আগস্ট তালেবানের সঙ্গে সংলাপে বসার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, তিনি হয়তো অচিরেই তালেবান নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। 
এদিকে আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানের পর ক্রমেই তীব্র হচ্ছে শরণার্থী সংকট।  রাজধানী কাবুলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেকটা শান্ত থাকলেও বিমানবন্দরের পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।  দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় করছেন অসংখ্য আফগান।  নিরাপত্তার কারণে কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন নাগরিকদের সাময়িক ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 
আফগানিস্তানের ক্ষমতায় গেলেও তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।  তবে আফগানিস্তান নিয়ে পশ্চিমাদের নাক না গলানোর আহ্বান জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।  একটা দেশের জনগণ কী করবে, না করবে; তাদের রাজনৈতিক জীবন কেমন হবে তার মানদণ্ড বাইরের শক্তি চাপিয়ে দিতে পারে না বলেও মনে করেন পুতিন। 
পুতিন বলেন, ‘আফগানিস্তানের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ তালেবান মুভমেন্টের নিয়ন্ত্রণে।  এটাই বাস্তব।  এ বাস্তবতা সামনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে ও আফগানিস্তান রাষ্ট্র ভেঙে পড়া প্রতিরোধে নিতে হবে পদক্ষেপ।’ 
‘বাইরে থেকে মূল্যবোধ’ চাপিয়ে দেওয়ার ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন নীতির’ সমালোচনা করে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘একটা দেশের জনগণ কী করবে, না করবে; তাদের রাজনৈতিক জীবন কেমন হবে তার মানদণ্ড আপনারা (বাইরের শক্তি) চাপিয়ে দিতে পারেন না। ’ 
আফগানিস্তান থেকে ‘শরণার্থীর ছদ্মবেশে’ যাতে ‘সন্ত্রাসীরা’ প্রতিবেশী দেশগুলোতে ঢুকতে না পারে, সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। 
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক অভিযানের ফলাফল নিয়ে ভেবে সময় পার করার মধ্যে তার দেশের কোনো লাভ নেই।  বরং আফগানিস্তানের সঙ্গে ভালো ও প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক স্থাপন করাটা গুরুত্বপূর্ণ।  

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img