ইরফান সেলিমের জামিন আপিল বহাল, বাধা নেই মুক্তিতে

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগের মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত হওয়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমের জামিন আপিল বহাল রয়েছে।

ইরফানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

আজ ২৫ এপ্রিল, রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর ইরফান সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাসেত মজুমদার ও সাঈদ আহমেদ রাজা।

তার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, আপিল বিভাগের আজকের এই আদেশের ফলে ইরফানের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই।

গত ২২ এপ্রিল শুনানির এই দিন ধার্য করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। ওইদিন ইরফান সেলিমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্ট গত ১৮ মার্চ ইরফান সেলিমের জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৮ মার্চ ইরফান সেলিমের জামিন চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি। একই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়। এ ছাড়া চেম্বার জজ আদালতের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ইরফান সেলিম আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। এই আবেনটিও শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপিত হলে আদালত ২৫ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রসিংয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিমের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছিল ‘সংসদ সদস্য’ স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। এরপর ওই নৌ-কর্মকর্তা মোটরসাইকেল থামিয়ে নিজের পরিচয় দেন। এ সময় গাড়িটি থেকে দুই ব্যক্তি নেমে এসে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিমকে মারধর শুরু করলে তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে লোকজন জমে গেলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।

ওইদিনই পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা হাজী সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে এরফান সেলিমকে এক বছরের এবং তার দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

পরে ২৬ অক্টোবর ইরফান সেলিমসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় ‘মারধর ও হত্যাচেষ্টা’র মামলা করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ। এরপর সেদিনই ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়। এ মামলায় ইরফান সেলিম ঢাকার আদালতে জামিনের আবেদন করলে ওই আদালত গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তা খারিজ করে দেন।

এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন ইরফান সেলিম। হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।

এন-কে

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ

- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরও

- Advertisement -spot_img