আফগানিস্তানে অসমাপ্ত অবকাঠামো এবং পুনর্গঠনমূলক প্রকল্পের কাজ ভারত শেষ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তালেবান মুখপাত্র সোহাইল শাহিন। তবে সুহিল শাহিন বলেছেন, অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ভারতকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) পাকিস্তানের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সুহিল শাহিন বলেন, ভারত যদি আফগানিস্তানের মাটিতে তাদের কাজ অব্যাহত রাখে তাতে তাদের আপত্তি নেই। তিনি স্পষ্ট করে জানান, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে কোনো জাতি, গোষ্ঠী কিংবা দেশকে আমরা সুযোগ দেব না।
এ সময় সুহিল শাহিন বলেন, আফগানিস্তানে যেসব অবকাঠামো ও পুনর্গঠনমূলক প্রকল্প শুরু করেছে তা শেষ করতে পারে ভারত। কারণ এসব প্রকল্প জনগণের জন্য। কিন্তু ভারত যদি আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে তার সামরিক লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে আফগান মাটিকে ব্যবহারের চেষ্টা করে তাহলে আমরা তার অনুমতি দেব না।
এর আগে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের পর ভারতকে ধন্যবাদ দেয় তালেবান। তবে একই সঙ্গে দিল্লিকে সামরিক তৎপরতা চালানোর ক্ষেত্রে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
ওই সময় তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন এক সাক্ষাৎকারে জানান, আফগানিস্তানে ভারতীয় সেনা উপস্থিতির পরিণতি ভালো হবে না। ভারতীয়রা আফগানিস্তানে অন্যান্য দেশের সামরিক উপস্থিতির পরিণতি স্বচক্ষে দেখেছেন।
কাবুলে আফগান পার্লামেন্ট প্রায় ৯ কোটি ডলার দিয়ে ভারত তৈরি করে দেয়। ভারতের বর্ডার রোড অরগানাইজেশন আফগানিস্তানে ইরান সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ২১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেছে । এই সড়ক তৈরিতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৫ কোটি ডলার।
কাবুলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য বাঘলান প্রদেশের রাজধানী পুল-ই-খুমরি থেকে ২০০ কেভি ডিসি ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়। শিশুদের জন্য চিকিৎসাকে নতুন করে গড়েছে ভারত। ইন্ডিয়ান মেডিকেল মিশনের আওতায় আফগানিস্তানে জায়গায় জায়গায় বিনা মূল্যের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বহু ক্লিনিক তৈরি করেছে ভারত।
২০১৬ সালে আফগানিস্তানে সালমা বাঁধ নামে একটি বাঁধ তৈরি করে ভারত। ভারত-আফগানিস্তানের বন্ধুত্বের নিশানস্বরূপ আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশে এই সালমা বাঁধ তৈরি করা হয়।
এ ছাড়া ভারত সরকার আফগানিস্তানকে ২০০ মিনিবাস, ৪০০ বাস, ১০৫ সরকারি গাড়ি, ২৮৫টি সেনার গাড়ি, ৫টি শহরে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স, ৩টি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান উপহার হিসেবে দিয়েছিল।